***অঘটন ঘটন পতনশীল*** লেখা: অনিক হাসান





ভার্সিটিতে নতুন ভর্তি হয়েছি
ভার্সিটি বাসা থেকে অনেক দূর এইজন্য বাসাটাও পরিবর্তন করেছি।
ব্যাচেলর লাইফ কষ্টের সিমা নাই😕
আমি আর আমার বন্ধু রাফি দুজনে অনেক কষ্টে বাসাটা ম্যানেজ করেছি।
নতুন বাসা নতুন লাইফ নতুন ক্লাস
সবই একটু ভিন্নরকম অভিজ্ঞতা।
কালকে ভার্সিটিতে আমার প্রথম ক্লাস।
ক্লাস শুরু হবে সকাল ৮টায়।
রাতে একটুও ঘুম হয়নি কখন
যে সকাল হবে সেই প্রহর গুনতেছিলাম।
অতপর ঘুম আসলো কিন্তু তখন ঘড়িতে রাত ৪টা।
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি ৭:৫০ বাজে।
কি করব বুঝতে পারছিলাম না।
কোন রকম ফ্রেস হয়ে দৌড়ে গেলাম ক্লাসে
গিয়ে দেখি ক্লাসে স্যার আছে।
আমি: মে আই কাম ইন স্যার?
স্যার : ইয়েস কাম। কিন্তু দাড়াও এখানে।
এখন বল তোমার নাম কি???
আমি : স্যার অসু
স্যার : ও আচ্ছা তো কোন কলেজের স্যার আপনি???
আমি : না স্যার আমি তো ছাত্র আমি স্যার হব কিভাবে?
স্যার : তাহলে আমি তোমার নাম জিঞ্জেস করেছি তুমি নাম বলার আগে স্যার কেন বললে?
আমি : না মানে ইয়ে স্যার।
সবাই আমার দিকে তাকিয়ে হা হা করে হাসতেছিল।
আমার মাথা ওইদিন এত খারাপ ছিল যে ওই দিন যা করছিলাম তাই যেন আমার বিরুদ্ধে হচ্ছিল।
ক্লাস শেষ করে দৌড়ে গেলাম বাসায় তাড়াহুড়ো করে আমি গিয়ে নক করলাম ৫ তলার বাসায় অথচ আমার বাসা ছিল ৪ তলায়।
অনেকক্ষন ধরে কলিংবেল বাজিয়ে যাচ্ছি কিন্তু ভেতর থেকে রাফি দরজাই খুলছে না।
একটুপর দরজা খুলল কিন্তু এর পর যা হল তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
দরজা খুলতেই দেখি এক অপূর্ব রমনী
তাখে দেখেই আমি ফিদা হয়ে গেলাম মুখ দিয়ে কোন কথাই বের হচ্ছিল না আমার
মেয়েটি দরজার ওপাশ থেকে বলছিল কি ব্যাপার কাকে চাই??
আমি যে কি বলব কিছুই বুঝতেছিলাম না।
পরে বললাম আমি তো এই বাসার নতুন ভাড়াটিয়া,ভিতরে কি রাফি আছে??
মেয়েটি বলল একটু দাঁড়ান দেখছি।
একটুপরে মেয়েটি আসল হাতে একটা চিরকুট নিয়ে।
চিরকুটটি আমার হাতে দিয়ে বলল এই ঠিকানায় যাবেন আর নিজের ভালো চিকিৎসা করাবেন।
আর বলল এই বাসায় আমরা ৫ বছর থেকে আছি যত্তসব পাগলের কারখানা।
এতক্ষনে আমার হুস আসল আমি ভুল করে ৫ তলায় চলে গিয়েছি।
এভাবেই প্রথম দিন কেটে গেল এক তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে।
পরের দিন বিকেলে আমি ছাদে গেলাম সংগীত চর্চার জন্য।
একটু পর মেয়েটিও আসল কিন্তু আমি টের পাইনি সে লুকিয়ে লুকিয় আমার গান শুনছিল।
যখন আমার সংগীত চর্চা শেষ হল তখন মেয়েটি পেছন থেকে বলল বাহ!! পাগলরাও তো তাহলে ভাল গান গায়।
আমি রেগে গিয়ে তখন তাকে বললাম আপনি আমাকে পাগল কেন বলছেন??
আমি না হয় ভুল করে ওইদিন আপনাদের বাসায় ঢুকে গিয়েছি এইজন্য কি আমি পাগল???
আর কারো বাসায় গেলে মানুষকে এইভাবে অপমান করে?? কোথায় একটু বসতে বলবেন।
মেয়েটি তখন বলল দুঃখিত আসলে ওইদিন আমার মন খুবই খারাপ ছিল এই জন্য আপনার সাথে এমন করেছিলাম।
পরেরদিন ক্লাসে গিয়ে দেখি সামনের বেঞ্চেই ওই মেয়েটি বসা। ক্লাস শেষ করে মেয়েটিকে জিঞ্জেস করলাম আপনি এখানে কি করে??
সে আমাকে একই প্রশ্ন করল।
পরে বলল যে আমি তো এই ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছি ।
এভাবেই শুরু হল আমাদের কাহীনি।
আমি অসু আর মেয়েটি ইরা।
দুজনেই একই ক্লাসে পড়ি।
খুবই ভালবেসে ফেলেছিলাম মেয়েটিকে।
রোজই আমাদের খুনসুটি ভালোবাসা চলতই।
ইরা খুবই জেদি মেয়ে একবার যা বলবে তাই করতো।
রোজ ছাদে যাই সংগীত চর্চা করতে আর ইরা যায় আমার কন্ঠে তার পছন্দের সংগীত গুলো শুনতে।
দেখতে দেখতে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে ফেলেছি কিন্তু চাকরী পাচ্ছি না।
দু একটা টিউশনি করি ওতে নিজের খরচ নিজের চলে যায়।
ওদের পরিবার এবং আমার পরিবারও রাজি ছিল আমাদের সম্পর্কে।
অপেক্ষাটা ছিল শুধু মাত্র একটা চাকরীর।
অবশেষে অনেক কষ্টে একটা চাকরীও পেলাম।
বিয়ের দিন তারিখ সবই ঠিক হল।
বিয়ের সব আয়োজন সম্পুর্ন হল সফল ভাবেই। বরের গাড়িতে আমি আমার কিছু বন্ধু এবং আমার কিছু কাছের মানুষই ছিলাম।
আমরা রওনা হলাম কনে বাড়ির উদ্দেশ্যে
ওইদিন প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিল সবই কিছুই ঠিক ছিল কিন্তুু ভাগ্যটা হয়ত আমার সহয় ছিল না।
রাস্তার ওপাশ থেকে একটা ট্রাক বেপরোয়া গতিতে ট্রাকটি চালাচ্ছিল।
মুহুর্তের মধ্যে সব ওলটপালট হয়ে গেল।
আমি বাদে স্পটেই সবাই মারা গেল।
আমাকে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা চলছিল
কিন্তু ওইযে ভাগ্য আমার সাথে ছিল না।
মাঝপথেই আমি ও চলে গেলাম ওপাড়ে তারা হয়ে মিশে গেলাম আকাশে।
সমাপ্ত।

বি:দ্র: লেখাটি সম্পুর্ন কাল্পনিক যদি কারো জীবনের সাথে মিলে যায় তা কাকতালীয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ