••••••শৈশবেব স্মৃতিচারণ•••••• লেখা: অনিক হাসান




★ জন্ম— ৩০ মে ১৯৯৮ 

★ আস্তে আস্তে বড় হতে থাকা

★ খাওয়া দাওয়ায় অরুচি

★ সারাদিন হৈ হুল্লোর করে বেড়ানো

★ একা একা কোথায় যেতে ভয় পাওয়া

★ সকালে আব্বুর ছাত্র-ছাত্রিদের ডেবিট আর ক্রেডিট বলতে থাকা শব্দে ঘুম ভাঙ্গা

★ সকালে ঘুম থেকে উঠে আব্বু স্কুলে যাওয়ার আগে তার বাইকের সামনে গিয়ে নিরবে ২ টাকা চাওয়ার প্রতিবাদ করা। টাকা যতক্ষন না দিত ততক্ষন বাইক থেকে না সরা।

★২ টাকা পেলেই মালাইওয়ালার ঘন্টার শব্দে দৌড়ে গিয়ে মালাই কিনে খাওয়া।

★বয়সে বড় হলেও বন্ধুরুপি কাকার পিঠে পিঠে সারাদিন ঘুরে বেড়ানো

★সবাই মিলে ওর ঘর থেকে তেল এর ঘর থেকে চাল আরেক জনের ঘরের থেকে ডাল মশলা সব সংগ্রহ করে সন্ধার সময় ছোট চুলা তৈরি করে রান্না করে ভাগ করে খাওয়া।

★বিকাল হলে চোর-পুলিশ /গোল্লাছুট/বউ সি ইত্যাদি খেলা।

★৫ টাকা দিয়ে দোকান থেকে ডিস্ক ভাড়া করে এনে নিজেদের ঘরের সিডি আর টিভি বাহিরে বের করে গ্রামের সবাই মিলে উঠানে বসে সিনেমা দেখা।

★২০০৩ সালের দিকে ঢাকায় খালার বাসায় বেড়াতে যাওয়া।

★খালাত বোন ফাতেমা কে ফলেমা নামে ডাকা

★ দুই ভাই-বোন মিলে প্রোচুর দুষ্টামি করা

★ একবার রাস্তাদিয়ে একটা টাক লোক হেটে যাচ্ছিল আমি দুষ্টুমি করে বারান্দা দিয়ে তার মাথায় প্রোস্রাব করে দিয়েছিলাম এরপর লোকটি খালুর কাছে বিচার নিয়ে আসার পর আমি না স্বীকার করে সব দোষ ফলেমার ঘারে উঠাই দিলাম এরপর খালু দরজা বন্ধ করে ফলেমা কে কি মারটাই না মারল😑

যদিও এরপর আমি বুঝতে পেরে নিজেই কান্না করে দিয়েছিলাম ওর মারের চিহ্ন দেখে।

★ওদের তখন খেলনার দোকান ছিল আমি তখন দোকান থেকে একটি খেলনা মোবাইল বাড়িতে নিয়ে যাই আর ওইটা দিয়ে সারাদিন হেলো ফলেমা ফলেমা করতে থাকি😂

★২০০৫ সালে আমাকে স্কুলে ভর্তি করে দেয়া

ভর্তির আগে হয়ে গিয়েছিল এক লঙ্কাকান্ড।

ভর্তি পরীক্ষার দিন দাদাভাই আমাকে কোলো করে স্কুলে পরীক্ষার রুমে বসিয়ে দিয়ে যায় পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে কিন্তু আমার খাতায় কোন দাগ হচ্ছে না বলে দাদাকে দিয়ে ৩ বার তলম পরিবর্তন করিয়ে নিয়ে আসি তবুও কাজ হয় না বলে কান্না করতে করতে খাতা নিয়ে বাড়ি চলে যাই।

আম্মু আমাকে ঐ অবস্থায় দেখে আবার কোলে করে স্কুলে নিয়ে যায়। বড় হবার পর বুঝতে পারি সেদিন পরীক্ষার আগে খাতায় দাগ না উঠার কারন ছিল আমি পরীক্ষার আগে ঝালমুড়ি খেয়েছিলাম আর আমার হাতের তেল খাতায় লেগেগিয়েছিল

★পরীক্ষা দিতে না পারার জন্য আমার কোন রোল আসল না অতপর স্যাররা আমাকে একদম শেষ রোল হিসেবে ভর্তি করে নেয়

তখন রোল ছিল ৩৫

★২০০৬ সালে ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে দ্বিতীয় শ্রেনীতে প্রথম স্থান দখল করে নেই।

★ ক্লাশ ১ থেকে ক্লাশ ২ পর্যন্ত আম্মু প্রতিদিন সকালে আমাকে কোলে করে স্কুলে দিয়ে আসত।

★ক্লাশ ৩ তে বসে আমি প্রথম কোরআন শরিফ খতম করি।

★এভাবে চলতে থাকে স্কুল জীবন

★তখন ছিল বিটিভি এর যুগ সবাই মিলে অপেক্ষা করতাম প্রতি শুক্রবার এর জন্য কেননা সেদিন দুপুরে সিনেমা আর রাতে আলিফ লায়লা, ইত্যাদি সহ অনেক অনুষ্ঠান হইত।

★এর পর যখন ডিস এন্টেনার যুগ আসল আর শুরু হল আমাদের ভাই বোনের মধ্যে রিমট যুদ্ধ।

★আব্বু যতক্ষন বাড়িতে থাকত না ততক্ষন টিভি আর আব্বুর আসার সময় হলেই পড়াই টেবিলে বসে পড়তাম

★২০০৮ সালের দিকে কাকা ভোলা থেকে তার অফিসের কম্পিউটার টা নিয়ে আসে সেখান থেকেই আমার প্রোযুক্তির সাথে পরিচয় হতে থাকে।

★তখন থেকেই আমি মোবাইল চালনার খুব পারদর্শি ছিলাম

★ কেউ চালাতে না পারলেই ছুটে আসত আমার সাহায্য নিতে

★আমরা ছিলাম একান্নবর্তি পরিবার।

★শুক্রবার সকালে দাদা অথবা কাকার সাথে বাজারে যেতাম আর নিজের পছন্দ মত মাছ কিনে নিয়ে আসতাম।

★যখন উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হলাম তখন খুব শান্ত হয়ে গেলাম কারন তখন স্কুলে সবসময় বাবা থাকত।

খুব ভয় কাজ করত যদি কিছু করি আর ধরা খাই রক্ষে নাই।

★বন্ধুরা দল বেঁধে স্কুলে যাওয়া আর আসার দৃশ্যগুলো আজও চোখের সামনে ভাসে


এমনই ছিল আমার জীবনের কিছু স্মৃতিচারণ

আরও এমন অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে যা লিখে শেষ হবার নয়।


বর্তমানের এই আধুনিক যুগে এসেও এই আধুনিক মানুষগুলির সাথে তাল মেলাতে খুবই হিমসিম খেতে হয় আমার কেননা আমি এই ডিজিটাল যুগের সন্তান হলেও আমার জন্মটা কিন্তুই ওই নব্বই দশকের শেষের দিকেই হয়েছে ইংরেজিতে বললে যা বুঝায় 90's kids.


©অনিক হাসান

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ